Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। আর কৃষকদের কৃষি কাজ করার জন্য দরকার ছোট বড় ঋণ। আবার তা পরিশোধের জন্য দরকার কৃষকদের প্রয়োজন মতো উপায়। তাই ১৯৭৩ সালের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের অধ্যাদেশের মাধ্যমে কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই একজন কৃষক বা গ্রাহকের কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানা উচিত।
কৃষি ব্যাংক খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ঋণ সুবিধা প্রদানকে লক্ষ্য হিসেবে বেচে নেয়। আর দেশের সকল পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ হওয়া এবং দারিদ্রতা কমানোর লক্ষে কৃষি, এমএমই এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রদানকে লক্ষ্য করে কাজ শুরু করা কৃষি ব্যাংক।
আজকে আমরা জানবো কৃষি ব্যাংক কাকে বলে, কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা, কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায়, কৃষি ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা, কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার, কৃষি ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব, কৃষি ব্যাংক কি অনলাইন কি না। চলুন শুরু করা যাক আজকের ব্লগ।
কৃষি ব্যাংক কাকে বলে
দেশে কৃষি উন্নয়ন অগ্রগতি এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কৃষি কাজে সম্পৃক্তদের ঋণ প্রদানে এক বিশেষ ব্যাংক কাজ করে থাকে। কৃষকদের এই বিশেষ ঋণ দেওয়া কার্যক্রম যে ব্যাংক থেকে পরিচালিত হয় তাকে কৃষি ব্যাংক বলে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধ্যাদেশে ১৯৭৩ সালের ২৭ নভেম্বর কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।
কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
অন্যান্য ব্যাংকের মতো কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্যেও কিছু নিয়ম কানুন আছে। দরকার হয় কিছু কাগজপত্রেের।
কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনেক আগেই জানিয়েছে কৃষি ব্যাংক কত্রিপক্ষ।
যেখানে কিছু ডকুমেন্টস এর কথা বলা হয়েছে।
এবং একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে।
এই ফরমের সাথে উল্লেখিত ডকুমেন্টস যুক্ত করে ব্যাংকের কাছে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম।
আপনার নিকটস্থ যেকোনো কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে একাউন্ট করতে চান জানিয়ে ফর্ম চাইলেই ব্যাংক আপনাকে ফর্ম প্রদান করবে। এছাড়াও আপনি এখানে ক্লিক করে কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী একটি ফর্ম দেখে নিতে পারেন।
এবা কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী কি কি ডকুমেন্টস দরকার সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যা যা দরকার
১) একাউন্ট খুলতে চাওয়া ব্যক্তির ১ কপি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি।
২) সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৩) ১ হাজার টাকা একাউন্ট খোলার সময়ে একাউন্ট সচল করতে জমা দিতে হবে। এই টাকাটা আপনার নতুন সচল হওয়া ব্যাংক একাউন্টে জমা হবে।
৪) একটি সচল মোবাইল নাম্বার। (মোবাইল নাম্বার থেকে লেনদেন সহ যাবতীয় তথ্য ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে পনাকে প্রেরণ করা হবে)।
৫) একজন নমিনি। এবং নমিনির ১ কপি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। ২ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৬) ব্যাংক থেকে দেওয়া ফর্ম সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করা।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক কয়টি ও কি কি
উপরের ডকুমেন্টস নিয়ে আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চাইলে তারা এগুলি বলবে। এবং আপনাকে একটি ফর্ম দিবে। যেহেতু আপনি ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যাবেন তাই এক বাড়ে যেয়েই একাউন্ট করতে পারেন।
ব্যাংক থেকে দেওয়া ফরম আপনার পূরণ করতে হবে।
এবার ফরমের সাথে আপনাকে উপরের ডকুমেন্টস গুলো সংযুক্ত করে ব্যাংকের ম্যানেজার বরাবর জমা দিতে হবে। বেশ, এবার আপনার কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী একাউন্ট খোলা শেষ। এখন আপনাকে ব্যাংক থেকে একটি চেক প্রদান করবে।
চেক এ উল্লেখিত একটি একাউন্ট নাম্বার থাকবে।এই নাম্বারটি হবে আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার।
বিঃ দ্রঃ অবশ্যই চেক বই নিজের সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। এবং চেক লেখার সম্পূর্ণ সঠিক নিয়ম জানতে হবে।
চেক লেখার সম্পূর্ণ সঠিক নিয়ম জানতে এখানে দেখুনঃ কৃষি ব্যাংকের চেক লেখার সঠিক নিয়ম।
কৃষি ব্যাংক সুযোগ সুবিধা । কৃষি ব্যাংক লোন
কৃষি ব্যাংকের অন্যতম এবং প্রদান সেবা কৃষকদের ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা। কৃষি ব্যাংক শতভাগ সরকারি একটি ব্যাংক। অন্যান্য ব্যাংকে যেসকল সেবা গ্রাহকদের দেওয়া হয় তার সব সেবাই কৃষি ব্যাক গ্রাহকরা পেয়ে থাকেন।তবে কৃষি ব্যাংক গ্রাহকদের যেসব সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম এবং প্রধান বিষয়ে হচ্ছে কৃষকরা অল্প সুদে ক্ষুদ্র ঋণ পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সহজ উপায়
এছাড়াও কৃষি ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা, কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার স্বল্প, কৃষি ব্যাংক সিসি লোন সুবিধা, কৃষি ব্যাংক থেকে সহজে লোন নেওয়ার সুযোগ সহ আরও অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে কৃষি ব্যাংক।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায়
কৃষকদের কথা বিবেচনা করে খুব সহজেই কৃষকদের ঋণ দিয়ে থাকে সরকারি ব্যাংক কৃষি ব্যাংক লিমিটেড। তবে সহজ এবং সঠিক তথ্য দিয়ে ঋণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক ঋণের পরিমাণ অনুযায়ী জমির দলিল বা শুধু মাত্র গ্যারান্টর রেখে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য প্রথমেই কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে।
যদি আগেই একাউন্ট থেকে থাকে তাহলে আর একাউন্ট করতে হবে না।
আর যদি আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ করতে চান কিন্তু একাউন্ট থেকে না থাকে তাহলে প্রথমেই কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী একটি কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর কে
একাউন্ট খোলার জন্য উপরের নিয়ম সম্পূর্ণ পরে সেই অনুযায়ী খুব সহজেই একাউন্ট খুলতে পারবেন।
একাউন্ট থাকলে বা খোলার পর ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে কথা বললে ম্যানেজার আপনাকে ঋণ নেওয়ার প্রসেসটি পরামর্শ আকারে বলবে।
এরপর আপনাকে বুঝে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণের পরিমাণ বললে যদি জমির দলিল জমা দেওয়া লাগে সেতা ব্যাংক আপনাকে বলবে।
আর জমির দলিল দেওয়ার মতো না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পরামরশি দিবে।
লোন নেওয়ার সম্পূর্ণ প্রসেসটি কৃষি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পন্ন করেন।
কৃষি ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা । ব্যাংক একাউন্ট
ডিপিএস সিবুধা জানার আগে ডিপিএস কি তা জানতে হবে। ডিপিএস হচ্ছে নির্দিষ্ট সময় পর পর বা এককালিন কিছু টাকা জমা রাখার পর নির্ধারিত সময় শেষে জমাক্রিত টাকা সহ টাকার একটা অংশ সুদ হিসেবে দেওয়া হয়।
অর্থাৎ সুদের অতিরিক্ত টাকাটাই ডিপিএস এর লাভ হিসেবে পরিচিত।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কৃষি ব্যাংকের ডিপিএস সুবিধা অনেক ভালো।কৃষি ব্যাংক ডিপিএস এ কত পারসেন্ট লাভ দিবে তা নির্ভর করবে আপনি কোন প্রসেসে কি পরিমাণ টাকা জমা রাখছেন তার উপর।
তবে স্বাভাবিক ভাবে কৃষি ব্যাংকে ৩ মাস ৬ মাস আবার ১ বছর মেয়াদি ভিন্ন ভিন্ন ডিপিএস আছে।
যে হিসাবের বিপরীতে ৫.৭৫%, ৫.৮৫% ও ৬% হারে মুনাফা দিয়ে থাকে।
কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার । ব্যাংক লোন
ঋণ করার আগে কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কৃষি ব্যাংক যতই কৃষক বান্ধব হোক তাদের থেকে অন্য ব্যাংক কম সুদেও ঋণ দিতেই পারে।
তাই কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার জানা আবশ্যক।
সাধারণত কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার ৯ শতাংশ হয়ে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ জুলাই সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। তবে খুব শিরগিরি সুদের হার কমানো এবং কৃষকদের ঋণ প্রদান্সিস্তেম আরও সহজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কৃষি ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব
এতক্ষণ আমরা জানতে পারলাম কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম।
এখন জেনে নেওয়া যাক কৃষি ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব সে সম্পর্কে।
মূলত কৃষকদের জন্য অন্যান্য ব্যাংকের থেকে কৃষি ব্যাংকে লোন নেওয়ার প্রসেস সহজ।
আরও পড়ুনঃ খুব সহজে ইস্লামি ব্যাংক লোন নিন
লোন আবেদনকারীর একাউন্ট থাকতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে। একজন নমিনি লাগবে।
নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং উভয়ের পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
আর লোন নেওয়ার জন্য ফর্ম লাগবে। ব্যাংকে গিয়ে বললেই ফর্ম দিবে।
ব্যাংকে যোগাযোগ করলেই ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য সাবতিও পরামর্শ নিয়ম জানিয়ে দিবে।
এবার জানতে পারলাম কৃষি ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব।
কৃষি ব্যাংক কি অনলাইন
কোনও ব্যাংক বা কৃষি অনলাইন কি না তা জানার আগে জানতে হবে ব্যাংক অনলাইন বলতে কি বুঝায়। ব্যাংক অনলাইন মানে হলো ব্যাংকের সারবিক বিষয়ে অনলাইনে পরিচালিত হয় কি না। আবার গ্রাহকদের সকল সেবা অনলাইনে দেওয়া হয় কি না।
কৃষি ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডেটা সেন্টারে কেন্দ্রীভূত সার্ভার শাখা সার্ভারের পরিবর্তে গ্রাহকদের সমস্ত স্ট্যাটিক ও আর্থিক ডেটা সংরক্ষণ করে রাখে।
গ্রাহক আর কোনো শাখার গ্রাহক না হয়ে সরাসরি ব্যাংকের গ্রাহক হয়।
আরও পড়ুনঃ জীবন বীমা কি কত প্রকার ও কি কি
এদিকে বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মোট ১০৩৮ টি শাখার সবকয়টি অনলাইনের মাধ্যমে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। কৃষি ব্যাংক কি অনলাইন কি না তা আরও জানতে কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.krishibank.org.bd/ প্রবেশ করুন।
কৃষি ব্যাংক সম্পর্কিত FAQS
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সুদের হার ৯ শতাংশ।
তবে খুব শিগগিরি এই হার আরও কমানো হচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানা যায়।
১৮ বছর না হলে সরাসরি একাউন্ট খোলার সম্ভব হচ্ছে না। তবে পিতামাতা চাইলে সন্তানের জন্য একাউন্ট খুলে টাকা জমাতে পারে।
কৃষি ব্যাংকের একাউন্ট খোলার খুব সহজ। উপরের নিয়ম অনুযায়ী আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখা থেকে আপনিও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে যেকোনো সময় একাউন্ট খুলতে পারেন।
কৃষি ব্যাংকের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের সকল পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ হওয়া এবং দারিদ্রতা কমানোর লক্ষে কৃষি, এমএমই এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করা।
এছাড়াও ব্যাংকটি অন্যান্য ব্যাংকের দেওয়া সকল সেবা প্রদান করে থাকে।
কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলা নিয়ে সর্বশেষ
আজকে আমরা জানতে পেরেছি কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।জেনেছি কৃষি ব্যাংক কাকে বলে, কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায়।কৃষি ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা।
কৃষি ব্যাংক ঋণ সুদের হার, কৃষি ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব।
এবং কৃষি ব্যাংক কি অনলাইন কি না।
13 thoughts on “কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ।কৃষি ব্যাংক লোন”